বই পড়া ভারি মজা
The Diamond Necklace’ by Guy de Maupassant
রিভিউ : আমান উল্লাহ
অত্যন্ত লোভী ও বিলাসী প্রকৃতির মহিলা “মাদাম মাতিলদা”। সে নিজেকে সবার সামনে সুন্দর ও ধনীত্ব-ভাব প্রকাশ করতে চাইতো। তার বিবাহ হয়েছিল শিক্ষা পরিষদের এক সামান্য কেরানির সঙ্গে। তার স্বামীর নাম জর্জ লোইসেল।
একদিন সন্ধায় জনশিক্ষা মন্ত্রী জর্জ লোইসেল ও তার স্ত্রী মাতিলদাকে তাদের বাসায় বল নাচের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করে। কিন্তু মাদাম মাতিলদা লোইসেল তার স্বামীর পাওয়া এই আমন্ত্রণে যেতে অস্মতি জানায়। তার কারণ ছিল অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য তার কোনো ভালো পোষাক নেই। এজন্য সে এই বল নাচের অনুষ্ঠানে যেতে পারবে না। লোইসেল কষ্ট করে কিছু টাকা জমিয়েছিল গ্রীষ্মের ছুটিতে বন্ধুদের সাথে পাখি শিকারে যাওয়ার জন্য বন্দুক কিনবে বলে। সে যে পরিমাণ টাকা জমিয়েছিল ঠিক সেই পরিমাণ টাকা দিয়ে তার স্ত্রীকে বল নাচের অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য পোশাক কিনে দিলো।
তারপর, অনুষ্ঠানের দিন যত এগিয়ে আসতে থাকে, ততই মাদাম লোইসেলের মধ্য অনুষ্ঠানে যেতে না চাওয়ার ভাব ভঙ্গি প্রকাশ পেতে থাকে। এবার যেতে না চাওয়ার কারণ তার কোনো মনি-মুক্তা নেই। অবশেষে তার স্বামীর পরামর্শে মাদাম লোইসেলের বান্ধবী ফোরসটিয়ারের কাছ থেকে একটি হীরার গলার হার ধার নিয়ে অনুষ্ঠানে যেতে সম্মত হয়।
বল নাচের অনুষ্ঠানে মাদাম লোইসেল তার সৌন্দর্যের অনেক প্রশংসা লাভ করে। অনুষ্ঠান শেষে তারা ভোর বেলা বাসার উদ্দেশ্য রওনা দেয়। মাদাম লোইসেল বাসায় ফিরে আয়নার সামনে দাঁড়াতেই লক্ষ্য করে তার গলায় হীরার হারটি নেই। মাদাম লোইসেল আঁতকে উঠে। ঘটনাটি তার স্বামীকে জানায়। তার স্বামী সেই মাত্রই হারটি খুঁজতে বাহির হয়ে যায়। এরপর অনেক খোঁজা-খুজির পর পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়ার পরও আর হারটি খুঁজে পাওয়া যায়নি। হারটি খুঁজে না পাওয়ায় লোইসেলে ৩৬ হাজার ফ্রাঁ দিয়ে একটি হীরার হার ক্রয় করে। এই হারটি লোইসেল তার বাবার মৃত্যুর পর পাওয়া ১৮ হাজার ফ্রাঁ ও বাকি টাকা ধার নিয়ে ক্রয় করে। হারটি ক্রয় করতে গিয়ে তাদের অনেক ধার-দেনায় পড়তে হয়।
বিশাল ধার-দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে তারা তাদের বাসাটি ছেড়ে অন্যত্রে একটি কম টাকার ছোট বাসা ভাড়া নেয়। এবং তারা দুইজন কাজ শুরু করলো। মাদাম লোইসেল আগে যে কাজ করত না সে কাজ গুলো এখন করতে শুরু করলো। অবশেষে, তারা ১০ বছর পরিশ্রম করার পর তাদের সকল ধার-দেনা পরিশোধ করতে পারল।
দশ বছর পরে একদিন ঘটনাক্রমে মাদাম লোইসেলের তার বান্ধবী ফোরস্টিয়ারের সাথে দেখা হয়। প্রথমে তার বান্ধবী তাকে চিনতে পারেনি কারণ তার চেহারায় এখন আর আগের মত সৌন্দর্য নেই। সে তার বান্ধবীর সাথে গত দশ বছরে ঘটে যাওয়া ঘটনা বর্ণনা করলো। ঘটনা শুনে মাদাম ফোরস্টিয়ার বলল, ‘হায়, আমার বেচারী মাতিলদা! আমারটি ছিল নকল হার। তার দাম পাঁচশত ফাঁর বেশি হবে না।’ “নেকলেস” গল্পের এই অপ্রত্যাশিত সমাপ্তির জন্য বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে ছিল।