The smart way of fighting is to subdue the enemy without fighting ----Sun Tzu(The art of war)

আন্তর্জাতিক দর্পণঃ

বন্ধুর মুখ ;শত্রুর ছায়া

-----------------------------

The smart way of fighting is to subdue the enemy without fighting 

----Sun Tzu(The art of war)

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চিরস্থায়ী শত্রু বা মিত্র বলতে কিছু নেই একথা যেমন সত্য তেমনি করোনা পরবর্তী সময়ে অর্থনৈতিক স্হবিরতা,প্রণোদনা, ঋণসহায়তা ছাড়াও চীনের ক্রমবর্ধমান উত্থান, ট্রাম্পের নেতৃত্বাধীন আমেরিকার ক্ষয়িষ্ণু প্রভাব,মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে আঞ্চলিক মেরুকরণ ও সর্বশেষ  মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পরবর্তী একমেরু ব্যবস্হা বন্ধু শত্রুর নতুন সমীকরণ তৈরি করবে এ কথাও মিথ্যা নয়।স্নায়ুযুদ্ধকালীন সময় থেকে শুরু করে বর্তমান মিডেল ইষ্ট বেইজড প্রক্সিযুদ্ধ  পর্যন্ত আমেরিকা রাশিয়ার স্বার্থদ্বন্দ্বের খেলায় আঞ্চলিক মাল্টি প্লেয়ার  হয়ত যোগ হবে।

গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত  মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে জার্মান প্রেসিডেন্ট ফাঙ্ক ওয়াল্টার স্টাইনমায়ার বলেন "যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়  ধারণাকে প্রত্যাখ্যান করছে"।

এছাড়া সম্প্রতি আফগানিস্তানের তালেবানদের সাথে চুক্তি ভূ-কৌশলগত বাস্তবতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পতনকেই সহায়তা করেছে।সর্বশেষ করোনা মোকাবিলায় মার্কিন সরকারের বিশৃঙ্খলা মূলত দক্ষতা ও সামর্থ্যের অভাবকে স্পষ্ট করেছে।এর ফলাফল  হয়তো নির্বাচন থেকে শুরু করে আরো সুদূরপ্রসারী সমালোচনামূলক জনমত তৈরি করবে।

মূলত পরাশক্তি ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর সাম্প্রতিক তৎপরতা নিন্মোক্ত বিষয় স্পষ্ট করে

ঋণফাঁদের সম্পর্ক ঃ

চীন ও ননস্টেট এক্টররা খেলবে।ADB,AIIB,বিশ্বব্যাংক,IMF সহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানরা ঋণ সহায়তা দিবে।চীন কৌশলগত অর্থনৈতিক সহায়তার নামে যে প্রক্সি নব্য উপনিবেশবাদ গড়ে তুলবে তা আফ্রিকা কিংবা তার ঋণজালে জর্জরিত দেশগুলো দেখলে বোঝা যায়।

স্বীয় স্বার্থ সংরক্ষণবাদ সম্পর্ক ঃ

ট্রাম্পের সময়ে আমেরিকা অনেক বৈশ্বিক দায়িত্ব  থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে।জলবায়ু চুক্তি থেকে একতরফা প্রত্যাহার,টিপিপি,ইরানের পরমাণু চুক্তি, ইউনেস্কো,WHO থেকে বেরিয়ে এসে,বানিজ্য যুদ্ধের মাধ্যমে সংরক্ষণবাদকে পাকাপোক্ত করছে তা অবশ্যই বিশ্বায়ন ধারনার সাথে সাংঘর্ষিক। 

তবে জো বাইডেন ক্ষমতায় আসলে  বিশ্ব হয়তো নতুন চমক দেখবে।ক্ষয়িষ্ণুতার প্রতিটিতে  পেরেক মেরে হয়তো আমেরিকার  উত্থান হবে America  is back নামে। 

ইউরোপের রেস্টোরেশন রিলেশন ঃ

৩১ জানুয়ারি ২০২০ সালে ব্রিটেন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন  এর সাথে সম্পর্ক ছেদ করে।এখন ব্রিটেন বিহীন ইউরোপীয় ইউনিয়ন অখন্ডতা ধরে রেখে নতুন করে অর্থনীতি, কূটনীতি এবং রাজনীতির ব্যালেন্স অব পাওয়ার করা অবশ্যই চ্যালেঞ্জিং।এখানে ফ্রান্স ও জার্মানি হবে এক্টর।তবে জার্মানিই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতৃত্ব দিবে।

জোট মহাজোটের সম্পর্কঃইন্দোপ্যাসিফিক জোট যেমন চীনকে খর্ব করতে হয়েছে চীন ও এশিয়া অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহায়তারও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নামে পাকিস্তান, ইরান ছাড়া দক্ষিণ এশিয়ায় আরো ঝুকঁবে।মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের সাথে আরব দেশগুলোর নিত্যনতুন চুক্তি  মূলত ইসরায়েলকে ঔ ভূখন্ডে মেনে নেওয়া অলিখিত  সমর্থন করে।আবার শিয়া ও হুথিদের নিয়ন্ত্রণ করতে সৌদি জোটের কার্যক্রম চলবে।আমেরিকার সাথে ভারতের জোট চীনকে কতটুকু ঠেকাতে পারবে তা সময়ই বলে দিবে।

 পরিশেষে বলা যায় ইতিহাসের শিক্ষা এই যে কেউ ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়না।শত্রু কিংবা মিত্র  যতো কৌশল ও অবলম্বন করুক না কেনো ইতিহাসে যোগ্যতম প্লেয়াররা স্হান পায়।তাই বন্ধুর মুখ কিংবা শত্রুর ছায়া সবই ভূ- রাজনীতিতে আপেক্ষিক বিষয়।সামনে আরো ভূরাজনীতির খেলা জমবে।নতুন নতুন প্লেয়ার আসবে বড়ো প্লেয়ারদের পাওয়ারকে ব্যালেন্স করতে।

ইমা হালিমা

সাধারণ শিক্ষা (ইংরেজি) 

৩৮ তম বিসিএস  (সুপারিশ প্রাপ্ত)